প্রকাশিত: ১৩/০২/২০২১ ৪:৫২ পিএম

ইমাম খাইর:
কক্সবাজার সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৫৯ বছর পরে ছাত্রীদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার এবং এবাদত খানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ইতোমধ্যে স্থান নির্ধারণের জন্য একটি কমিটিও করে দিয়েছেন অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল আহসান।

কমিটিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর মো. গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

চার সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাধু বড়ুয়া চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক সালাহ উদ্দিন ও গ্রন্থাগারিক নার্গিস ফাতেমা।

কমিটির সদস্যরা ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার এবং এবাদত খানার স্থান নির্ধারণ করে অধ্যক্ষকে অবগত করবেন।

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশও জারি করেছেন অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল আহসান। যার নং-কসক/১১৭২৭/২০২১।

আদেশের অনুলিপি কলেজের উপাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সরকারি কলেজের ৩ জন ছাত্রী উন্মুক্ত মাঠে নামাজ পড়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপরে কলেজ প্রশাসনের টনক নড়ে।

একনজরে কক্সবাজার সরকারি কলেজ:
#পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট কোর্স সম্পন্ন কক্সবাজার জেলার একমাত্র সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সরকারি কলেজ।
#সাগর বিধৌত সবুজ অরণ্যে ঘেরা প্রাচুর্য ও সৌন্দর্য্যরে অনন্য লীলা নিকেতন কক্সবাজার জেলা। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার জেলার শীর্ষ স্থানীয় ঐতিহ্য মন্ডিত গৌরবদীপ্ত প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সরকারি কলেজ ১৯৬২ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার একটি মহকুমা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পুরো এক শতক পরে বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণাংশের এ শহরে প্রথম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সে দিনগুলো গভীর প্রত্যয়ের ইতিহাস।
১৯৬২ খৃষ্টাব্দে স.আ.ম শামসুল হুদা চৌধুরীকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করে কক্সবাজার হাই স্কুল ভবনে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ নিয়ে আজকের কক্সবাজার সরকারি কলেজের যাত্রা শুরু হয় যা বর্তমানে ১৮.৯২ একর ভূমির উপর অবস্থিত। ১৯৬৭ খৃষ্টাব্দ হতে কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান কোর্স চালু হয়। ১৯৬৬ খৃষ্টাব্দে কক্সবাজার কলেজে স্নাতক পর্যায়ে কলা ও বাণিজ্য বিভাগ চালু হয় এবং ১৯৭০-৭১ শিক্ষাবর্ষ হতে স্নাতক পর্যায়ে বিএসসি কোর্স চালু হয়। ১৯৮০ খৃষ্টাব্দের ১ মার্চ সরকার কক্সবাজার কলেজকে জাতীয়করণ করে এবং তখন হতে এ কলেজ কক্সবাজার সরকারি কলেজ নামে পরিচিত হয়ে আসছে।
বর্তমানে কক্সবাজার সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা এগার হাজার প্রায়। ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ হতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন ক্রমে অত্র কলেজে অনার্স কোর্স চালু হয়। বর্তমানে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, উদ্ভিদবিদ্যা ও গণিত-এই ১০টি বিষয়ে অনার্স এবং বাংলা, হিসাববিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা কোর্স অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়াও কক্সবাজার সরকারি কলেজে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এইচএসসি এবং বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। কলেজে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষসহ মোট শিক্ষকের পদ রয়েছে ৬৬ টি। এছাড়াও ৫০ এর অধিক ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির সরকারি-বেসরকারি কর্মচারি কর্মরত রয়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি এর ফলাফলে সেরা দশ কলেজের মধ্যে কক্সবাজার সরকারি কলেজের সম্মানজনক অবস্থান রয়েছে বিগত কয়েক বছর ধরে। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষাসমূহে প্রতিবছরই ছাত্র-ছাত্রী তাদের প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেই চলেছে।
বর্তমানে কলেজে কলা ভবন, পুরাতন বিজ্ঞান ভবন, নতুন বিজ্ঞান ভবন, প্রশাসনিক ভবন, বাণিজ্য ভবন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ভবন, নব নির্মিত একাডেমিক-কাম-এক্সামিনেশন হল ভবন, সম্প্রসারিত নতুন বিজ্ঞান ভবন, ২৪০ আসন বিশিষ্ট ২ টি ছাত্রী হোস্টেল, অধ্যক্ষ নিবাস, পুকুর সংলগ্ন মসজিদ নিয়ে মোট ১১ টি ভবন রয়েছে।
কক্সবাজার সরকারি কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৩ টি সুদৃশ্য কম্পিউটার ল্যাব এবং ১১ টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম রয়েছে। এছাড়া একটি বিদেশি ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (FLTC) রয়েছে। জেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় নতুন শহীদ মিনার নির্মাণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন ফি জমাদানের জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে বেসিক ব্যাংকের একটি কালেকশন বুথ রয়েছে। UNCHR প্রদত্ত একটি বাস ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত ১ টি বাসসহ ২ টি কলেজ বাস রয়েছে। এছাড়াও কলেজে একটি বিশাল খেলার মাঠ আছে।
সময়ের শ্রোতধারায় সরকার, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগী, বিদ্যুৎসাহী ব্যক্তিবর্গের একান্ত পরিশ্রম, মেধা মনন, অর্থ ও সহযোগিতায় ঐতিহ্য মন্ডিত কক্সবাজার সরকারি কলেজের রয়েছে এক গৌরবদীপ্ত ইতিহাস। বর্তমানে কলেজটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত কক্সবাজার জেলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও সামাজিক পরিবেশ তথা জাতীয় উন্নয়নে এ বিদ্যাপীঠের ভূমিকা অনস্বীকার্য। -তথ্য সুত্র: Cox’s Bazar Govt. College

পাঠকের মতামত

সেনাকর্মকর্তা শ’হী’দ তানজিম স্মরণে রামু ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নাম পরিবর্তন

অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে চকরিয়ার ডুলাহাজারায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযান ...

রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়েদোল্লাহ

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তিসহ ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মং সায়েদোল্লাহ। উচ্চশিক্ষা নিতে ...

তুরস্কে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ

ইসলামী ঐতিহ্যের স্মৃতি বিজড়িত তুরস্কে অনুষ্ঠিত ৯ম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ, ...